Translate

Friday, April 1, 2016

অবশেষে বিবিসি বাংলার প্রবাহকে সত্য বলতে পিছপা হলেন না তনুর বাবা !!!

কুমিল্লার কলেজ ছাত্রী সোহাগী জাহান তনুকে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনা নিয়ে বাংলাদেশে বিক্ষোভ প্রতিবাদ চলছে।
বিবিসি বাংলার প্রবাহ টিভি অনুষ্ঠানের জন্যে দেয়া এক সাক্ষাতকারে তনুর বাবা ইয়ার হোসেন বলেন, “মেয়েটা ক্যান্টনমেন্টের ভেতর মারা গেছে, এটা বলতে পারবো না স্যার, তাইলে গুলি কইরা মাইরা ফালান। যদি না বলতে পারি তাইলে গুলি কইরা মাইরা দেন আমারে”।
গত সপ্তাহে সেনানিবাস এলাকায় তনুর মৃতদেহ উদ্ধারের পর দেশটির মূলধারার গণমাধ্যমে সংবাদ না এলেও অনলাইনে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এটি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে।
তনু হত্যাকাণ্ডে শুরুর দিকে ফেসবুকে যারা প্রতিবাদ করেছেন তাদের মধ্যে অন্যতম নাট্য ব্যক্তিত্ব নাসির উদ্দীন ইউসুফ।
তিনি বলেন, “কবর দিয়ে আবার সেই লাশ আপনারা তুলে ফেলছেন তাহলে আপনাদের অনেক কাজ না করেই আপনারা তাড়াহুড়া করেছেন। কেন? জনগণের মনে তো এই প্রশ্নগুলি আসবেই”
তিনি বলেন ধীরগতি আর সিদ্ধান্তহীনতা সরকার এবং সেনাবাহিনী দুই তরফ থেকেই হয়েছে।
তনুর ব্যাপারে সেনানিবাস থেকে নাসির উদ্দীন ইউসুফকে কথা বলতে নিষেধ করা হয়েছে এমন শিরোনামেও খবর প্রকাশ করে কয়েকটি অনলাইন পত্রিকা।

যদিও এটি সত্য নয় বলে জানান মিস্টার ইউসুফ।
তিনি বলেন, “অনেক যায়গায় ছড়িয়েছে যে আমার উপরে চাপ আছে। আমি কোনো চাপে নেই। আমি খুব পরিষ্কার, আমি কোনো চাপে নেই। সেনসিটিভ যায়গাটা হচ্ছে আমাদের বুঝতে হবে এটা ক্যান্টনমেন্টের এরিয়ার মধ্যে ঘটেছে।”
এদিকে তনু হত্যার পরদিন থেকেই বিক্ষোভ করছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের শিক্ষার্থীরা।
তাদের সঙ্গে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, গণজাগরণ মঞ্চ, বাম ছাত্র সংগঠনসহ সাধারণ শিক্ষার্থীরাও প্রতিবাদ বিক্ষোভ করে যাচ্ছে।
বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বলছেন সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে তনু হত্যার বিচার না হওয়া পর্যন্ত তাদের লাগাতার আন্দোলন চলবে।
ভিক্টোরিয়া কলেজ ক্যাম্পাসে আন্দোলনরত একজন ছাত্রী বলেন, “এই জন্যই আমাদের এ আন্দোলন যে, একটা প্রটেক্ট এরিয়ার মধ্যে একটা মেয়ে কিভাবে ধর্ষিত হয় তাকে তারপরে খুন করা হয়?”
অপর এক শিক্ষার্থী বলেন, “লাশ কবর থেকে উদঘাটন করে আবার ওর ময়না তদন্ত হবে। কেন? প্রথম তাইলে যে ময়না তদন্ত হইছে সেটা কি হইছে?
কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার শাহ আবিদ হোসেন বলেন, তারা প্রাথমিকভাবে অনুসিদ্ধান্তে এসেছেন তনুকে হত্যা করা হয়েছে এবং সে ধর্ষিতও হতে পারে।
তিনি বলেন, “সেনা কর্তৃপক্ষ যে তথ্যগুলো আমাদেরকে দিবে তারপর নির্ভর করেই আমাদেরকে কিন্তু কাজ করতে হবে। কারণ আমার কিন্তু ঐখানে গিয়ে ইন্ডিসক্রিমিনেটলি… আমার ওই একসেসটা নাই যে আমি জিজ্ঞাসা করব । সেনানিবাসের মধ্যে কিন্তু বেশকিছু বিধিবদ্ধ বিষয় প্রতিপালন করেই কিন্তু কাজ করতে হয়। এটাও তার ব্যতিক্রম নয়”।
কোনোকিছু আড়াল করারও কোনো ইচ্ছা পুলিশের নেই বলে দাবি করে কুমিল্লার পুলিশ সুপার।
তনুর বাবা ইয়ার হোসেন ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী।
ঘটনার নবম দিনে তনুর বাবার সাক্ষাৎকার নিতে চাইলে ইয়ার হোসেন জানান, অনুমতি ছাড়া তাদেরকে সেনানিবাস থেকে বের হতে দেয়া হচ্ছে না।
পরে ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের সিইও’র সঙ্গে যোগাযোগ করলে কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে তাকে কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড অফিসে নিয়ে আসা হয়।
সেখানে তনুর বাবা কথা বলেন বিবিসির সঙ্গে।
“আমার মেয়েরেতো আমি তুলছি, কিভাবে তুলছি আমি দেখছি। তার কোনো গলায় কাটা ছিল না। মুখটা থেতলানো আছিলো, কানডি দিয়া রক্ত আইছে, মাথার এই জাগাডা (পেছনে) উঁচা আছিলো, উঁচা উঁচা একটু ফুলা এই…”
তনুকে কোথায় পাওয়া পাওয়া গেছে এ নিয়ে আন্ত:বাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর বিবৃতি দিয়ে কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট সংলগ্ন সীমানা প্রাচীর নেই এরকম এলাকার বিবরণ দেয়। তবে ইয়ার হোসেন একটি বিষয় জোর দিয়ে বলে আসছেন যে মেয়েকে তিনি সেনানিবাস এলাকা থেকেই উদ্ধার করেছেন।
“এহনো কই- তহনো কই, আমিতো কারো নাম বলতেছি না। হ্যাঁ মেয়েডা এখানে মারা গেছে, এডাতো বলতে হবে আমার। যে- মেয়েডা ক্যান্টনমেন্টের ভেতর মারা গেছে, এটা বলতে পারবো না স্যার, তাইলে গুলি কইরা মাইরা ফালান। যদি না বলতে পারি তাইলে গুলি কইরা মাইরা দেন আমারে”।
তনু হত্যাকাণ্ড প্রসঙ্গে কুমিল্লা সেনা কর্তৃপক্ষের সাক্ষাৎকার চেয়ে যোগাযোগ করা হলে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর থেকে সাক্ষাৎকার দেয়া আপাতত সম্ভব নয় বলে বিবিসিকে জানানো হয়।

Wednesday, March 30, 2016

চোরের রাজা সাইফুরস-এর শেষ দেখে ছাড়ব: শিক্ষামন্ত্রী

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের
টাকা চুরির (হ্যাকিং) এর ঘটনাকে কেন্দ্র করে
সাইফুরস-এর ‘বিভ্রান্তিকর’ বিজ্ঞাপন প্রচার
প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ
বলেছেন, ‘চোরের রাজা, যিনি চোরামি
শেখাতে চান, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা কী হবে? এ
দেশের আইন কী বলে? আমরা এর শেষ পর্যন্ত
দেখে ছাড়ব।’
মঙ্গলবার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে এক
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন
তিনি।
প্রতিষ্ঠানটির প্রধানকে ‘চোরের রাজা’ আখ্যা
দিয়ে অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘তার
মাথায় এতো জ্ঞান..., সেই লোকটাকে আদর্শ
হিসেবে ধরে বিজ্ঞাপন দিয়েছেন। ডাক্তার,
ইঞ্জিনিয়ার, গবেষক, হ্যাকার- সব এক মাপে
নিয়ে বলেছেন, আমার কাছে আসো হ্যাকিং
ভালো করে শিখে যাও!’
মন্ত্রী বলেন, ‘চিন্তা করতে পারছেন, ডাক্তার-
ইঞ্জিনিয়ার-গবেষক-হ্যাকার সবাইকে এক
সারিতে নিয়েছেন। বলে গেছেন, এটার জন্য
আমার বিরুদ্ধে কতো কোটি টাকা খরচ করবেন।
আমার তো এক পয়সাও নাই, বিনা পয়সায় জীবন
কাটিয়ে এসেছি, আর মরবার সময় কোটি কোটি
টাকার ভয়...।
নাহিদ বলেন, ‘এজন্য বলি, শুধু জ্ঞান অর্জন করলে
হবে না, ভালো মানুষ হতে হবে। জনগণের প্রতি
দরদী হতে হবে। তবেই সে জনগণের কল্যাণে,
দেশের কল্যাণে, দেশের উন্নয়নে যাবে, নিজেও
স্বার্থক হবে। না হলে সে চোর হবে, ধরা পড়বে,
সর্বনাশ হবে, আল্টিমেটলি বাঁচতে পারবে না।’
‘প্রলোভন দিয়ে যদি হ্যাকিং শিখি, এই যদি
বিজ্ঞাপন দিতে পারে, কে বিজ্ঞাপন ছাপালো,
কে প্রচার করলো, মানুষ কেন প্রতিবাদ করলো
না?’, যোগ করেন তিনি।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘হাইকোর্টের রায়ে
সাইফু’স এর রমরমা কোচিং ব্যবসা, বেআইনি।
আমরাই বেআইনি করেছি, কিন্তু আমার তো শক্তি
নাই। শক্তি নাই কেন, এখনই চাইলে একদল ছাত্র
নিয়ে ভেঙে-গুঁড়িয়ে দেবো। আমরা সে পথে
যাবো না। হাইকোর্ট রায় দিলেও পারি না।’
নাহিদ আরও বলেন, ‘এটা সমাজ! তিনি নাকি
শিক্ষক ছিলেন, ব্যবসা করার জন্য ছেলে-
মেয়েদের প্রলোভন দেখাচ্ছেন, ভালো হ্যাকার
হতে পারবে, ইংলিশ শিখলে আসো আমার কাছে,
শেখো। আমরা মামলা করছি, আপনাদের
প্রতিক্রিয়া সবার কাছে জানতে চাই।’
সে সময় মঞ্চে উপস্থিত বিশেষ অতিথি
প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকসহ অতিথি এবং
উপস্থিত দর্শক সারিতে সবাই হাততালি দিয়ে
মন্ত্রীকে সমর্থন জানান।
অনুষ্ঠানে এশিয়া প্যাসিফিক বিশ্ববিদ্যালয়ের
উপাচার্য অধ্যাপক ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী,
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক
নীলুফার আহমেদ, এথিক্স অ্যাডভান্সড
টেকনোলজি লিমিটেডের (ইএটিএল) ব্যবস্থাপনা
পরিচালক এমএ মুবিন খান উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে হ্যাকার বানানোর প্ররোচনা দেওয়ায় গত
২৩ মার্চ সচিবালয়ে সভায় শিক্ষামন্ত্রী নুরুল
ইসলাম নাহিদ কোচিং সেন্টারটির বিরুদ্ধে
আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দেন। সাইফুর’স এর
বিরুদ্ধে রাজধানীর রমনা থানায় একটি সাধারণ
ডায়েরিও করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
প্রসঙ্গত, হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ
ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে টাকা চুরি এবং একটি
শব্দের বানান ভুলে ২ কোটি ডলার রক্ষা পাওয়ার
ঘটনা বাংলাদেশের গণমাধ্যমে প্রকাশের পর
একটি জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞাপন দেয় সাইফুরস।

wWw.FB.Com/mNews24

তনু হত্যাকান্ড ফরেনসিক ডিএনএ নমুনা সংগ্রহে ৯ দিন পর লাশ তুলে নিল সিআইডি


মোঃ আলাউদ্দিন মুন্সী (আলাল)

ফরেনসিক ডিএনএ নমুনা সংগ্রহের জন্য নিহত তনু’র লাশ কবর থেকে তুলে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেছে সিআইডি।
তনু হত্যার ৯ দিন পর বুধবার বেলা ১১টায় কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার মির্জাপুর গ্রামের কবরস্থান থেকে ভিক্টোরিয়া কলেজ ছাত্রী ও নাট্যকর্মী সোহাগী জাহান তনু’র লাশ উত্তোলন করা হয়েছে। তনু’র লাশ উত্তলনের সময় সিআইডির ক্রাইমসিন ফরেনসিক ডিএনএ ল্যাবরেটরী ইউনিটের সদস্য উপস্থিত ছিলেন। এ সময় কুমিল্লা পুলিশ, সিআইডি ও প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
গত ২৮ মার্চ মামলার সুষ্ঠু তদন্ত, ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ, সুরতহাল তৈরি ও পুনঃময়নাতদন্ত করতে কবর থেকে লাশ উত্তোলনের আদেশ দেন কুমিল্লার একটি আদালত। তনু হত্যা মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) ওসি একেএম মনজুর আলমের আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত এ আদেশ দেন।
লাশ উত্তোলনের সময় ঢাকা সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার ড. নাজমুল করিম, কুমিল্লার পুলিশ সুপার মো. শাহ আবিদ হোসেন, এ কাজে দায়িত্ব পাওয়া নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট কুমিল্লা সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা লুৎফুন নাহার, তনুর বাবা ইয়ার হোসেন ও বড় ভাই নাজমুল হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
সকাল সাড়ে ১০ টার কিছু পরে তনুর কবরের চারপাশ কাপর দিয়ে ঢেকে দেয় পুলিশের সদস্যরা। পরে সিআইডির নো এন্ট্রি লিখা ব্যারিক্যাড দেয়া হয় চার দিকে। কুমিল্লা জেলা পুলিশ, প্রশাসনের কর্মকর্তা, সিআইডি ও একাজে সম্পৃক্ত ব্যাক্তিরা ছাড়া করস্থানে ২শ গজের মধ্যে কাউকে ঢুকতে দেয়নি পুলিশ। প্রায় এক ঘন্ট কবর থেকে লাশ উত্তলন করে জরুরী সকল কাজ শেষে করে তনু’র অর্ধ গলিত মরদেহ নিয়ে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের উদ্যেশে রওনা দেয় পুলিশের কর্মকর্তারা। কুমিল্লা কবরস্থানের পাশে মাঠে একটি সামিয়ানা টানানো হয়। সেখানে প্রশাসনের লোকজন অবস্থান করেন। সকাল থেকে কবরস্থানের পাশে উৎসুক মানুষের ভিড় জমে। তাদের নিয়ন্ত্রণে পুলিশ সদস্যদের বেগ পেতে হয়।
তনুর বাবা ইয়ার হোসেন সাংবাদিকেদর বলেছেন, ‘তনু হত্যার সঠিক বিচারের জন্য লাশ উত্তোলন করা হচ্ছে বলে প্রশাসন থেকে জানানো হয়েছে। আমি মেয়ে হত্যার সঠিক বিচার চাই।’
কুমিল্লার পুলিশ সুপার শাহ আবিদ হোসেন জানান, লাশ উত্তোলন করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হবে। অধিকতর আলামত সংগ্রহের পর সেখান থেকে আজই আবার লাশ এনে আগের কবরে দাফন করা হবে।