বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের
টাকা চুরির (হ্যাকিং) এর ঘটনাকে কেন্দ্র করে
সাইফুরস-এর ‘বিভ্রান্তিকর’ বিজ্ঞাপন প্রচার
প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ
বলেছেন, ‘চোরের রাজা, যিনি চোরামি
শেখাতে চান, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা কী হবে? এ
দেশের আইন কী বলে? আমরা এর শেষ পর্যন্ত
দেখে ছাড়ব।’
মঙ্গলবার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে এক
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন
তিনি।
প্রতিষ্ঠানটির প্রধানকে ‘চোরের রাজা’ আখ্যা
দিয়ে অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘তার
মাথায় এতো জ্ঞান..., সেই লোকটাকে আদর্শ
হিসেবে ধরে বিজ্ঞাপন দিয়েছেন। ডাক্তার,
ইঞ্জিনিয়ার, গবেষক, হ্যাকার- সব এক মাপে
নিয়ে বলেছেন, আমার কাছে আসো হ্যাকিং
ভালো করে শিখে যাও!’
মন্ত্রী বলেন, ‘চিন্তা করতে পারছেন, ডাক্তার-
ইঞ্জিনিয়ার-গবেষক-হ্যাকার সবাইকে এক
সারিতে নিয়েছেন। বলে গেছেন, এটার জন্য
আমার বিরুদ্ধে কতো কোটি টাকা খরচ করবেন।
আমার তো এক পয়সাও নাই, বিনা পয়সায় জীবন
কাটিয়ে এসেছি, আর মরবার সময় কোটি কোটি
টাকার ভয়...।
নাহিদ বলেন, ‘এজন্য বলি, শুধু জ্ঞান অর্জন করলে
হবে না, ভালো মানুষ হতে হবে। জনগণের প্রতি
দরদী হতে হবে। তবেই সে জনগণের কল্যাণে,
দেশের কল্যাণে, দেশের উন্নয়নে যাবে, নিজেও
স্বার্থক হবে। না হলে সে চোর হবে, ধরা পড়বে,
সর্বনাশ হবে, আল্টিমেটলি বাঁচতে পারবে না।’
‘প্রলোভন দিয়ে যদি হ্যাকিং শিখি, এই যদি
বিজ্ঞাপন দিতে পারে, কে বিজ্ঞাপন ছাপালো,
কে প্রচার করলো, মানুষ কেন প্রতিবাদ করলো
না?’, যোগ করেন তিনি।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘হাইকোর্টের রায়ে
সাইফু’স এর রমরমা কোচিং ব্যবসা, বেআইনি।
আমরাই বেআইনি করেছি, কিন্তু আমার তো শক্তি
নাই। শক্তি নাই কেন, এখনই চাইলে একদল ছাত্র
নিয়ে ভেঙে-গুঁড়িয়ে দেবো। আমরা সে পথে
যাবো না। হাইকোর্ট রায় দিলেও পারি না।’
নাহিদ আরও বলেন, ‘এটা সমাজ! তিনি নাকি
শিক্ষক ছিলেন, ব্যবসা করার জন্য ছেলে-
মেয়েদের প্রলোভন দেখাচ্ছেন, ভালো হ্যাকার
হতে পারবে, ইংলিশ শিখলে আসো আমার কাছে,
শেখো। আমরা মামলা করছি, আপনাদের
প্রতিক্রিয়া সবার কাছে জানতে চাই।’
সে সময় মঞ্চে উপস্থিত বিশেষ অতিথি
প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকসহ অতিথি এবং
উপস্থিত দর্শক সারিতে সবাই হাততালি দিয়ে
মন্ত্রীকে সমর্থন জানান।
অনুষ্ঠানে এশিয়া প্যাসিফিক বিশ্ববিদ্যালয়ের
উপাচার্য অধ্যাপক ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী,
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক
নীলুফার আহমেদ, এথিক্স অ্যাডভান্সড
টেকনোলজি লিমিটেডের (ইএটিএল) ব্যবস্থাপনা
পরিচালক এমএ মুবিন খান উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে হ্যাকার বানানোর প্ররোচনা দেওয়ায় গত
২৩ মার্চ সচিবালয়ে সভায় শিক্ষামন্ত্রী নুরুল
ইসলাম নাহিদ কোচিং সেন্টারটির বিরুদ্ধে
আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দেন। সাইফুর’স এর
বিরুদ্ধে রাজধানীর রমনা থানায় একটি সাধারণ
ডায়েরিও করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
প্রসঙ্গত, হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ
ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে টাকা চুরি এবং একটি
শব্দের বানান ভুলে ২ কোটি ডলার রক্ষা পাওয়ার
ঘটনা বাংলাদেশের গণমাধ্যমে প্রকাশের পর
একটি জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞাপন দেয় সাইফুরস।
wWw.FB.Com/mNews24
No comments:
Post a Comment