Translate

Friday, March 25, 2016

প্রধানমন্ত্রী আগুন নিয়ে খেলবেন না, অনেক হয়েছে: আল্লামা জুনাইদ বাবুনগরী

সংবিধান থেকে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাতিলের
ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে;
প্রধানমন্ত্রী আগুন নিয়ে খেলবেন না, অনেক হয়েছে
: আল্লামা জুনাইদ বাবুনগরী
নাসির উদ্দিন মানিক, চট্টগ্রাম প্রতিনিধি :
হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব আল্লামা হাফেজ
জুনাইদ বাবুনগরী বলেছেন, আজকে বাংলাদেশের
রাষ্ট্রক্ষমতায় উগ্র সেকুলার ও ইসলামবিদ্বেষী
নাস্তিকগোষ্ঠীর প্রতিনিধিরা আওয়ামী লীগের
ঘাড়ের ওপর জগদ্দল পাথরের মতো চেপে বসে আছে।
এরা রাষ্ট্রযন্ত্রের অপব্যবহার করে আলেমসমাজ ও
ইসলামের বিরুদ্ধে এবং দেশের তৌহিদি জনতার
ধর্মীয় অনুভূতিতে একের পর এক আঘাত করে যাচ্ছে।
এরই ধারাবাহিকতায় হঠাৎ করে সেই
ইসলামবিদ্বেষী দুষ্টচক্র সংবিধান থেকে রাষ্ট্রধর্ম
বাতিলের অপতৎপরতায় মেতে উঠেছে। বৃহত্তর
তৌহিদি জনতার ধর্মীয় অনুভূতিতে এই গুটিকয়েক
ইসলামবিদ্বেষী নাস্তিকদের চূড়ান্ত আঘাত হানার
স্পর্ধা দেখে আমরা প্রচন্ড ক্ষুব্ধ ও স্তম্ভিত।
সংবিধান থেকে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাতিলের
ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে হেফাজতে ইসলাম ঘোষিত
সারা দেশে বিক্ষোভ মিছিলের অংশ হিসেবে
চট্টগ্রাম আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদের উত্তর
গেইটে চত্বরে আয়োজিত আজ বাদজুমা এক বিক্ষোভ
সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
আল্লামা জুনাইদ বাবুনগরী বলেন, আমরা স্পষ্টভাবে
জানিয়ে দিতে চাই, সংবিধান থেকে
ষড়যন্ত্রমূলকভাবে রাষ্ট্রধর্মের বিলুপ্তিকরণ দেশের
আলেমসমাজ ও তৌহিদি জনতার বিরুদ্ধে যুদ্ধ
ঘোষণার শামিল।
রাষ্ট্রধর্ম বাতিল করে সংবিধানকে ইসলাম
বিদ্বেষী সেকুলার নাস্তিক্যবাদীদের আদর্শে
পরিণত করার ষড়যন্ত্র এদেশের বৃহত্তর তৌহিদি জনগণ
ও আলেমসমাজ রাজপথে কঠোর আন্দোলনে নেমে
নস্যাৎ করে দেবে।
আমরা প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলতে চাই,
আগুন নিয়ে খেলবেন না। অনেক হয়েছে।
সংখ্যাগরিষ্ঠ তৌহিদি জনতার মনের ভাষা বুঝে
রাষ্ট্রধর্ম বাতিলের অপতৎপরতা অতিসত্বর বন্ধ করুন।
অন্যথায় দেশের তৌহিদি জনতা ও আলেমসমাজ রক্ত
দিয়ে তা প্রতিহত করবে ইনশাআল্লাহ। আমাদেরকে
রাজপথে নামতে বাধ্য করনে না।
তিনি বলেন, ভারতের তুলনায় এদেশে সংখ্যালঘু
সম্প্রদায়গুলো অনেক নিরাপদ ও স্বস্তিতে রয়েছে।
এখানে সংখ্যালঘুদের প্রতি কোনো ধরনের বর্ণবাদ,
জাতপাতের সংস্কৃতি কিংবা আর্থসামাজিক
বৈষম্যের মতো অমানবিক ও নিবর্তনমূলক দৃষ্টিভঙ্গি
নেই, কেননা ইসলাম এখানে মহানুভবতা ও সাম্যের
মহান শিক্ষা দিয়ে একটি স্থিতিশীল ও
অসাম্প্রদায়িক সমাজব্যবস্থা গড়ে তোলার ক্ষেত্রে
সহায়ক হিসেবে বিরাজমান।
সুতরাং রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম থাকলে এতে করে
সংখ্যালঘুদের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। তবে
এক্ষেত্রে কিছু মিডিয়ার একচক্ষু দালালি নীতি ও
প্রপাগান্ডামূলক তৎপরতা পরিহার করতে হবে।
জুনাইদ বাবুনগরী বলেন, ভারত ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ রাষ্ট্র
হওয়া সত্ত্বেও রাষ্ট্রীয় সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের
মদদদাতা হিসেবে ইতোমধ্যেই কুখ্যাতি লাভ
করেছে। তাই বলা যায়, সংবিধানে সেকুলারিজম
থাকলেও যে সবার ধর্মীয় সমানাধিকার নিশ্চিত
হয়না তা বলাই বাহুল্য। এছাড়া আমাদের সমাজে
বহুভাষাভাষীর অধিবাস সত্ত্বেও সংখ্যাগরিষ্ঠের
‘বাংলা’ই হচ্ছে রাষ্ট্রভাষা, তেমনি সংবিধানে
সংখ্যাগরিষ্ঠের ধর্ম ‘ইসলাম’ দেশের রাষ্ট্রধর্ম
হিসেবে বহাল রাখার পাশাপাশি সবার ধর্ম
পালনের অধিকার ও স্বাাধীনতা সংরক্ষণ করা
হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, সবচে দুঃখজনক ব্যাপার হলো,
এদেশে আজ স্বয়ং সংখ্যাগরিষ্ঠ তৌহিদি জনতা ও
আলেমসমাজই রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস ও নিপীড়নের
নির্মম শিকার। তিনি বলেন, ইসলামে সন্ত্রাস ও
জঙ্গীবাদের কোন স্থান নেই।
বাবুনগরী বলেন, দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ নাগরিকদের
প্রতি রাষ্ট্রের চরম রাজনৈতিক বৈষম্যমূলক নীতির
কারণে প্রশাসন ও আর্থ-সামাজিক স্তরে
পক্ষপাতমূলকভাবে সংখ্যালঘু হিন্দু নাগরিকদের
উন্নয়ন ও সুযোগ-সুবিধা অবাধ করে দেওয়া হয়েছে।
পক্ষান্তরে ইসলাম ভাবাপন্ন নাগরিকরা বঞ্চনা ও
বর্ণবাদী দৃষ্টিভঙ্গির শিকার।
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের উদ্যোগে আজ
বাদজুমা আন্দরকিল্লা শাহী মসজিদের উত্তর গেইটে
চত্বরে অনুষ্ঠিত মিছিল পূর্ব সমাবেশে সভাপতিত্ব
করেন মহাসচিব আল্লামা হাফেজ জুনাইদ বাবুনগরী।
আরো বক্তব্য রাখেন, কেন্দ্রীয় যুগ্মমহাসচিব
মাওলানা মঈনুদ্দিন রুহী, সাংগঠনিক সম্পাদক
মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, অর্থসম্পাদক
মাওলানা ইলিয়াস ওসমানি, ঢাকা মহানগর নেতা
মুফতি ফখরুল ইসলাম, চট্টগ্রাম মহানগর নেতা মাস্টার
আহসানুল্লাহ, মীর মোহাম্মদ ইদরিস, মাওলানা
জালালুদ্দিন, মাওলানা হাফেজ মুজাম্মেল হক,
হাফেজ ফায়সাল, মাওলানা আনম আহমদুল্লাহ,
এডভোকেট নিজামুদ্দিন, মাওলানা আনোয়ার
হোসেন রব্বানি, মাওলানা ইউনুস, মাওলানা
ইকবাল খলিল, মাওলানা জয়নাল কুতুবী, ,মাওলানা
সায়েমুল্লাহ, মাওলানা শেখ আবু তাহের, মাওলানা
কামরুল ইসলাম কাসেমী, মাওলানা জুনাইদ
জাওহার, মাওলানা ওসমান কাসেমি, মাওলানা
শিব্বির আহমদ প্রমূখ।
সমাবেশ শেষে এক বিরাট বিক্ষোভ মিছিল বিভিন্ন
সড়ক প্রদক্ষিণ করে জামালখান প্রেসক্লাব চত্বরে
গিয়ে শেষ হয়।

No comments:

Post a Comment