Translate

Tuesday, March 29, 2016

রিজার্ভ চুরির তদন্ত সব কর্মকর্তার ল্যাপটপ জমা দেয়ার নির্দেশ কাজে স্থবিরতার আশঙ্কা

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ৮০০ কোটি টাকা চুরির পর দেশে-বিদেশে তদন্তে নেমেছে বিভিন্ন সংস্থা। এর অংশ হিসেবে গতকাল ব্যাংকের সব কর্মকর্তার ল্যাপটপ আইটি অপারেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন ডিপার্টমেন্টে জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। একই সাথে বাংলাদেশ ব্যাংক ট্রেনিং অ্যাকাডেমি ও শাখা অফিসের সব কর্মকর্তার ল্যাপটপ সংশ্লিষ্ট অ্যাকাডেমি বা অফিসের আইটি সেলে জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ল্যাপটপ জমা দেয়ার জন্য সময় দেয়া হয়েছে মাত্র দুই দিন। অর্থাৎ আগামীকাল বুধবারের মধ্যে ল্যাপটপ জমা দিতে বলা হয়েছে। গতকাল সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকের হিউম্যান রিসোর্সেস ডিপার্টমেন্ট-১ থেকে এ ধরনের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের চলমান তদন্তের স্বার্থে ব্যাংক সব কর্মকর্তার ল্যাপটপ সংগ্রহ করে সিকিউরিটি এজেন্ট ইনস্টল করে নেটওয়ার্ক চলমান করা প্রয়োজন। এ জন্য সব কর্মকর্তাকে ল্যাপটপ জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তদন্ত শেষে প্রত্যেক কর্মকর্তার ল্যাপটপ ফেরত দেয়া হবে।
জানা গেছে, বর্তমানে প্রায় দেড় হাজার কর্মকর্তার ল্যাপটপ রয়েছে। হঠাৎ ল্যাপটপ জমা দেয়ার নির্দেশে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কর্মকর্তারা। তাদের মতে, তদন্তের নামে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের অক্ষম করা হচ্ছে। কর্মস্পৃহা নষ্ট করা হচ্ছে। এতে অনেকেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গুরুত্বপূর্ণ একটি বিভাগের কয়েকজন কর্মকর্তা গতকাল নয়া দিগন্তকে জানিয়েছেন, বাংলাদেশ ব্যাংককে শতভাগ ডিজিটালাইজড করা হয়েছে। তদারকি প্রতিষ্ঠান হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাথে কার্যত দেশের ৫৬টি ব্যাংক ও ৩২টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নিবিড় সংযোগ রয়েছে। প্রতিটি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে দৈনিক, সাপ্তাহিক, মাসিক, ত্রৈমাসিক, অর্ধবার্ষিক ও বার্ষিক প্রতিবেদন দাখিল করতে হয় বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে। ওইসব প্রতিবেদনের ভিত্তিতে বাংলাদেশ ব্যাংক সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোর সরবরাহকৃত তথ্য পর্যালোচনা করে থাকে। কোনো তথ্যে আর্থিক অসঙ্গতি দেখা দিলে, সে অনুযায়ী ব্যাংকগুলোর তদারকি করা হয় এবং প্রয়োজনে ব্যাংকগুলোকে জরিমানা করা হয়। আগে এসব কাজ করা হতো ম্যানুয়ালি অর্থাৎ ব্যাংকগুলো তাদের আর্থিক প্রতিবেদন কাগজের ফাইলে জমা দিত। গত ২০০৯ সালের মাঝামাঝি থেকে এটা অনলাইননির্ভর করা হয়। অর্থাৎ এখন আর কাগজে আর্থিক প্রতিবেদন ব্যাংকগুলো জমা দেয় না, জমা দেয়া হয় অনলাইনের মাধ্যমে।
এ ছাড়া ডিজিটালাইজেশনের আওতায় সরকারের সঞ্চয়পত্রের মুনাফা ও গ্রাহকের মূল টাকা অনলাইনের মাধ্যমে পরিশোধ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। আগে গ্রাহককে সরাসরি বাংলাদেশ ব্যাংকে আসতে হতো। এখন ঘরে বসেই অনলাইনের মাধ্যমে মুনাফা পাচ্ছেন সঞ্চয়পত্রের গ্রাহকেরা। এ ছাড়া প্রতি সপ্তাহেই সরকার বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে ঋণ নিয়ে থাকে। আর এসব ঋণের নিলাম ডাকা হয় অনলাইনের মাধ্যমে। অর্থাৎ বাংলাদেশ ব্যাংকের পুরো কার্যক্রমই এখন অনলাইনের আওতায় আনা হয়েছে। এসব কার্যক্রম সম্পাদনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রায় দেড় হাজার ল্যাপটপ সরবরাহ করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাও তাদের কার্যক্রমে এখন ল্যাপটপনির্ভর হয়ে পড়েছেন।
এমনি পরিস্থিতিতে তদন্তের নামে ল্যাপটপ জমা দেয়ার নির্দেশনায় হতবাক হয়েছেন অনেক কর্মকর্তা। বিশেষ করে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল অফিস, ডিপার্টমেন্ট অব অফসাইট সুপারভিশন (ডস), ব্যাংকিং রেগুলেশন অ্যান্ড পলিসি বিভাগ, মনিটারি পলিসি বিভাগ, ফরেন এক্সচেঞ্জ পলিসি ডিপার্টমেন্টসহ গুরুত্বপূর্ণ বিভাগগুলোর কার্যক্রম পুরোপুরি কম্পিউটারনির্ভর হয়ে পড়েছে। এসব বিভাগের কর্মকর্তারা অনেকেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। কারণ, কোনো এক সপ্তাহের কাজ পিছিয়ে গেলে পুরো মাসের কাজে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়। এ ছাড়া দিনের কাজ দিনেই যেখানে অনেক সময় শেষ করা যায় না, অনেকেই বাসায় গিয়েও ল্যাপটপে অফিসের কাজ করেন এ অবস্থায় কম্পিউটার জমা দিলে কবে তদন্ত শেষ হবে, আর কবে তারা কম্পিউটার ফেরত পাবেন এ আশঙ্কায় ভুগছেন কর্মকর্তারা।
এ দিকে, এর আগে হঠাৎ করে সিকিউরিটির নামে বাংলাদেশ ব্যাংকের সব কম্পিউটার ও ল্যাপটপে ভারতের নাগরিক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত আইটি কনসালট্যান্ট রাকেশ আস্তানার মৌখিক পরামর্শে তারই সরবরাহকৃত সিকিউরিটি প্যাচ নামক একটি সফটওয়্যার ইনস্টল করার নির্দেশ দেয়া হয়। এতে অনেকেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। অনেকেই প্রথমে তথ্য পাচার হওয়ার আশঙ্কায় এটা ইনস্টল করেননি। কিন্তু পরে বাধ্য হয়ে ইনস্টল করেছেন। এখন আবার ল্যাপটপ জমা দেয়ার নির্দেশনায় একই অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে কর্মকর্তাদের মধ্যে।
সংশ্লিষ্ট কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, রিজার্ভ থেকে অর্থ চুরি হওয়ার পর এমনিতে তদন্তের নামে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তাকে নাজেহাল করা হচ্ছে। এতে প্রায় সব বিভাগের কাজকর্মে স্থবিরতা নেমে এসেছে। অনেকেই শুধু হাজিরা দেয়ার জন্য অফিসে আসছেন। নতুন করে ল্যাপটপ জমা দেয়ার নির্দেশনায় অনেক কাজ বাধাগ্রস্ত হবে। বিষয়টি নতুন গভর্নর ফজলে কবিরের দৃষ্টিগোচর করার জন্যও অনেকেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।
 
 wWw.FB.Com/mNews24

রাজকোষ চুরি: ২৪১ কোটি টাকা উদ্ধারের সম্ভাবনা


বাংলাদেশের চুরি যাওয়া অর্থের মধ্য থেকে ৩ কোটি ১০ লাখ ডলার বা প্রায় ২৪১ কোটি ৮০ লাখ টাকা উদ্ধার করে তা বাংলাদেশকে ফেরত দেয়া সম্ভব হতে পারে। এমনটা বিশ্বাস করেন ফিলিপাইনের সিনেট প্রেসিডেন্ট রাফ রেকটো। আজ সকালে তিনি ডিজেডএমএম’কে এক সাক্ষাতকারে এসব কথা বলেছেন। এ সময় রেকটো বলেন, ক্যাসিনো জাঙ্কেট অপারেটর কিম ওং ফেরত দিতে পারে এক কোটি ৪০ লাখ ডলার, যা বাংলাদেশের টাকায় প্রায় ১০৯ কোটি ২০ লাখ টাকা। গতকাল মঙ্গলবার সিনেট ব্লু রিবন কমিটির শুনানিতে কিম ওং স্বীকার করে নিয়েছেন, তার ক্যাসিনো সোলাইরে নিরাপদ হেফাজতে আছে পাচার করা অর্থের ৪৬ লাখ ৩০ হাজার ডলার। অন্যদিকে তার কোম্পানি ইস্টার্ন হাওয়াই লেইজার কোম্পানি লিমিটেডে আছে এক কোটি ডলার। ওই শুনানিতে কিম ওং আরও বলেন, যদি কর্তৃপক্ষ তাকে নির্দেশ দেয় তাহলে এই অর্থ তিনি ফেরত দিতে চান স্বেচ্ছায়। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের চুরি যাওয়া অর্থের মধ্য থেকে এক কোটি ৭০ লাখ ডলার রয়েছে রেমিটেন্স কোম্পানি ফিলরেম সাভিস করপোরেশনের কাছে। তার এ বক্তব্যের প্রেক্ষিতে সিনেটর রেকটো তার সাক্ষাতকারে বলেন, যদি এই অর্থ তার কাছ থেকে উদ্ধার করা যায় তাহলে মোট উদ্ধার করা অর্থের পরিমাণ দাঁড়াবে প্রায় ৩ কোটি ১০ লাখ ডলার ( ৪৬ লাখ ৩০ হাজার ডলার+এক কোটি ডলার+ এক কোটি ৭০ লাখ ডলার)। ওদিকে ফিলরেমের কাছে টাকা থাকার যে দাবি করেছেন কিম ওং তা অস্বীকার করেছেন এ প্রতিষ্ঠানের প্রেসিডেন্ট সালুদ বাউতিস্তা। তিনি বলেছেন, সব অর্থ রূপান্তরিত হয়ে চলে গেছে। বাংলাদেশের ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরিতে ফিলরেমকে ‘মেজর প্লেয়ার’ বলে আখ্যায়িত করার বিষয়টিও প্রত্যাখ্যান করে বাউতিস্তা। তিনি বলেন, এ দুর্নীতি থেকে ফিলরেম কোন সুবিধা নেয় নি। কিন্তু তার এ কথায় সংশয় প্রকাশ করেছেন সিনেটর রেকটো। তিনি বলেন, কিম ওংকে যে টাকা দেয়া হয়েছে সে বিষয়টি এর আগের শুনানিতে স্বীকার করেন নি বাউতিস্তা।

 wWw.FB.Com/mNews24

আজ তনু'র লাশ কবর থেকে উত্তোলন করা হবে।

মোঃ নাজিম উদ্দিন, মুরাদনগর (কুমিল্লা)
আজ বুধবার কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্রী ও নাট্যকর্মী সোহাগী জাহান তনুর হত্যা ঘটনার আটদিন পর কবর থেকে লাশ উত্তোলনের কথা রয়েছে। আদর্শ সদর এর উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা লুৎফুর নাহার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে লাশ উত্তোলনের সময় দায়িত্ব পালন করবেন।
আদালত সুত্রে জানা যায়, মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে কবর থেকে লাশ উত্তোলন করে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ, সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি ও পুনরায় ময়নাতদন্ত করতে তনু হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) ওসি একেএম মনজুর আলম অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আবেদন করেন।
তদন্তকারী কর্মকর্তার আবেদনের প্রেক্ষিতে সোমবার বিকালে কুমিল্লার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জয়নাব বেগম কবর থেকে তনুর লাশ উত্তোলনের জন্য একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে কুমিল্লার জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে এ নির্দেশ দেন বিজ্ঞ আদালত ।
বিজ্ঞ আদালতের আদেশের পর কুমিল্লার জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদর্শ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা লুৎফুর নাহারকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগসহ বাঙ্গরা বাজার থানাকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করার জন্য আদেশ দেন।
লাশ উত্তোলনের আদেশের পর তনু নিজ উপজেলা মুরাদনগরের সাধারন জনগনের মধ্যে বিরাজ করছে চরম উৎকন্ঠা। কখন লাশ উত্তোলন হবে, লাশ উত্তোলনের সময় কারা কারা আসবে, কোন টিভি চ্যানেলে সরাসরি সম্প্রচার হবে কি না এনিয়ে সর্বত্র চলছে আলোচনা। সাধারন মানুষের দাবি একটাই তনু হত্যার ঘটনায় যেন সুষ্ঠ তদন্ত ও ন্যায় বিচার হয়।
এদিকে কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুত্রে জানা যায় চাঞ্চল্যকর তনু হত্যা মামলা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ( ডিবি) থেকে সিআইডিতে স্থানান্তর করা হয়েছে।
উল্লেখ্য গত ২০ মার্চ রাতে ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্রী ও নাট্যকর্মী সোহাগী জাহান তনুকে সেনানিবাস এলাকায় হত্যার পর লাশ একটি জঙ্গলে ফেলে রাখে দুর্বৃত্তরা। এ বিষয়ে তার পিতা কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের অফিস সহায়ক ইয়ার হোসেন বাদী হয়ে পরের দিন অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে কুমিল্লা কোতয়ালী মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।